শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৫

লক্ষ্মীপুর জেলা

লক্ষ্মীপুর জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল

ভৌগোলিক সীমানা
এর মোট আয়তন ১৪৫৫.৯৬ বর্গ কিমি। এটি উত্তরে চাঁদপুর জেলা, দক্ষিণে ভোলা ও নোয়াখালি, পূর্বে নোয়াখালি এবং পশ্চিমে বরিশাল, ভোলা ও মেঘনা নদী দ্বারা পরিবেষ্ঠিত।

লক্ষ্মীপুর শহর রহমতখালি নদীর তীরে অবস্থিত এবং মোট ১২ টি ওয়ার্ড ও ২২ টি মহল্লা নিয়ে গঠিত। ১৯৭৬ সালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভা গঠিত হয়।

প্রধান নদী
মেঘনা, ডাকাতিয়া, কাটাখালি, রহমতখালি ও ভুলুয়া।

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
১৯৮৪ সালে লক্ষ্মীপুর একটি পূর্নাঙ্গ জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ জেলার অধীনে ৫ টি উপজেলা, ৩ টি পৌরসভা, ৫৫টি মহল্লা, ৪৭ টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৪৪৫টি মৌযা এবং ৫৩৬ টি গ্রাম আছে।

লক্ষ্মীপুর জেলার ৫ টি উপজেলা হলো:

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা
রায়পুর উপজেলা
রামগঞ্জ উপজেলা
কমলনগর উপজেলা
রামগতি উপজেলা
ইতিহাস
ত্রয়োদশ শতাব্দিতে লক্ষ্মীপুর ভুলনা রাজ্যের অধীন ছিল। মুঘল ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে লক্ষ্মীপুরে একটি সামরিক স্থাপনা ছিল। ষোড়শ থেকে উনবিংশ শতাব্দি পর্যন্ত এ এলাকায় প্রচুর পরিমাণে লবন উৎপন্ন হত এবং বাইরে রপ্তানি হত। লবনের কারনে এখানে লবন বিপ্লব ঘটে। স্বদেশী আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরবাসী স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ করে। এ সময় মহাত্মা গান্ধি এ অঞ্চল ভ্রমণ করেন। তিনি তখন প্রায়ই কাফিলাতলি আখড়া ও রামগঞ্জের শ্রীরামপুর রাজবাড়ীতে অবস্থান করতেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২৬ সালের জুন মাসে লক্ষ্মীপুর সফরে আসেন। ১৯৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এখানে পাক-হানাদার বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে সতের বার যুদ্ধ হয়। এখানে তিনটি স্মৃতি স্তম্ভ, দুইটি গণকবর ও একটি গণহত্যা কেন্দ্র পাওয়া যায়।

অর্থনীতি
প্রধান পেশাঃ কৃষি (৩৫.১৯%), মৎস্যজীবি (২.৭%), কৃষি শ্রমিক (১৯.৮৬%), শ্রমজীবি (৩.১৬%), ব্যবসা(১২.১০%), চাকুরী (১২.২১%), যোগাযোগ (২.০৪%), মিস্ত্রী (১.২৭%) এবং অন্যান্য (১১.৪৭%)।

প্রধান শস্যঃ ধান, গম, সরিষা, পাট, মরিচ, আলু, ডাল, ভুট্টা, সয়াবিন, আখ, কাঠবাদাম।

প্রধান ফলঃ আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, তাল, লেবু, নারিকেল, সুপারি, আপেল, সারিফা, আমড়া, জাম।

খামারঃ এ জেলায় ৫৮ টি মৎস্যখামার, ১৬টি নার্সারি, ১০২টি দুগ্ধ খামার, ২২২টি মুরগীর খামার ও ৩টি হ্যাচারি রয়েছে।

শিল্প-কারখানাঃ টেক্সটাইল মিল, ধানের কল, ময়দার কল, বরফের কল, অ্যালুমিনিয়াম কারখানা, বিড়ি কারখানা, মোম কারখানা, সাবানের কারখানা, নারিকেলের তন্তু প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, ছাপাখানা, তেলের মিল, ব্যাটারি কারখানা, বেকারি।

কুটির শিল্পঃবাঁশ ও বেতের কাজ, কাঠের কাজ, সেলাই, কামার, কুমার, মুচি, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির মেকানিক ইত্যাদি।

প্রধান রপ্তানি পন্যঃ নারিকেল, মাছ, মরিচ, কাঠবাদাম,সুপারি।

যোগাযোগ
এ জেলার ২৪৩ কিমি রাস্তা পাকা, ২৩৫ কিমি রাস্তা সেমি পাকা এবং ১৮২২ কিমি রাস্তা এখনও পাকা করা হয়নি।

চিত্তাকর্ষক স্থান
প্রায় শতাব্দী পুরাতন টুমচর
ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসা।

তিতা খান জামে মসজিদ
মিতা খান মসজিদ
মধু বানু মসজিদ
দায়েম শাহ মসজিদ
আব্দুল্লাহপুর জামে মসজিদ
শাহাপুর নীল কুঠি
বশিকপুর জামে মসজিদ
দালাল বাজার জমিদার বাড়ী
শ্রীগোবিন্দ মহাপ্রভু আখড়া
দালাল বাজার মঠ
খোয়া-সাগর-দীঘি
কমলা সুন্দরী দীঘি
রামগঞ্জের শ্রীরামপুর রাজবাড়ী
পালের হাট স্কুল
জালালউদ্দিন মৌলভী বাড়ির শতাব্দী প্রাচীন মসজিদ
জাহানাবাদ বাইতুল আমান জামে মসজিদ
বশিকপুর বাজার
মজু চৌধুরির হাট
শিশু পার্ক
নন্দনপুর সমর উদ্দীন মৌলভী বাড়ী
নন্দনপুর ঈদগাহ ময়দান
হামিদুল্লাহ ভুইয়া বাড়ী, রসুলগঞ্জ বাজার।
মুফতি আহম্মদ উল্লাহ জামে মসজিদ, পশ্চিম চরপাতা
কৃতি ব্যক্তিত্ব
হাফেজ্জী হুজুর
আ স ম আব্দুর রব
মোহাম্মদ উল্যাহ বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি
অধ্যাপক মুজাফফর আহমদ চৌধুরী ( শিক্ষাবিদ ও প্রাক্তন মন্ত্রী পরিষদ সদস্য)
কাজী মোতাহার হোসেন (সাহিত্যিক)
সেলিনা হোসেন (কথা সাহিত্যিক)
ডঃ মফিজুল্যাহ কবির (ইতিহাসবিদ)
দিলারা জামান
রামেন্দ্র মজুমদার
ফেরদৌসী মজুমদার
এ.টি এম. শামসুজ্জামান (অভিনেতা)
নিশাত মজুমদার (প্রথম বাংলাদেশী নারী এভারেষ্ট বিজয়ী)
মরহুম মুফতি আহম্মদ উল্লাহ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন