শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৫

লক্ষ্মীপুর জেলা

লক্ষ্মীপুর জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল

ভৌগোলিক সীমানা
এর মোট আয়তন ১৪৫৫.৯৬ বর্গ কিমি। এটি উত্তরে চাঁদপুর জেলা, দক্ষিণে ভোলা ও নোয়াখালি, পূর্বে নোয়াখালি এবং পশ্চিমে বরিশাল, ভোলা ও মেঘনা নদী দ্বারা পরিবেষ্ঠিত।

লক্ষ্মীপুর শহর রহমতখালি নদীর তীরে অবস্থিত এবং মোট ১২ টি ওয়ার্ড ও ২২ টি মহল্লা নিয়ে গঠিত। ১৯৭৬ সালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভা গঠিত হয়।

প্রধান নদী
মেঘনা, ডাকাতিয়া, কাটাখালি, রহমতখালি ও ভুলুয়া।

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
১৯৮৪ সালে লক্ষ্মীপুর একটি পূর্নাঙ্গ জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ জেলার অধীনে ৫ টি উপজেলা, ৩ টি পৌরসভা, ৫৫টি মহল্লা, ৪৭ টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৪৪৫টি মৌযা এবং ৫৩৬ টি গ্রাম আছে।

লক্ষ্মীপুর জেলার ৫ টি উপজেলা হলো:

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা
রায়পুর উপজেলা
রামগঞ্জ উপজেলা
কমলনগর উপজেলা
রামগতি উপজেলা
ইতিহাস
ত্রয়োদশ শতাব্দিতে লক্ষ্মীপুর ভুলনা রাজ্যের অধীন ছিল। মুঘল ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে লক্ষ্মীপুরে একটি সামরিক স্থাপনা ছিল। ষোড়শ থেকে উনবিংশ শতাব্দি পর্যন্ত এ এলাকায় প্রচুর পরিমাণে লবন উৎপন্ন হত এবং বাইরে রপ্তানি হত। লবনের কারনে এখানে লবন বিপ্লব ঘটে। স্বদেশী আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরবাসী স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ করে। এ সময় মহাত্মা গান্ধি এ অঞ্চল ভ্রমণ করেন। তিনি তখন প্রায়ই কাফিলাতলি আখড়া ও রামগঞ্জের শ্রীরামপুর রাজবাড়ীতে অবস্থান করতেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২৬ সালের জুন মাসে লক্ষ্মীপুর সফরে আসেন। ১৯৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এখানে পাক-হানাদার বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে সতের বার যুদ্ধ হয়। এখানে তিনটি স্মৃতি স্তম্ভ, দুইটি গণকবর ও একটি গণহত্যা কেন্দ্র পাওয়া যায়।

অর্থনীতি
প্রধান পেশাঃ কৃষি (৩৫.১৯%), মৎস্যজীবি (২.৭%), কৃষি শ্রমিক (১৯.৮৬%), শ্রমজীবি (৩.১৬%), ব্যবসা(১২.১০%), চাকুরী (১২.২১%), যোগাযোগ (২.০৪%), মিস্ত্রী (১.২৭%) এবং অন্যান্য (১১.৪৭%)।

প্রধান শস্যঃ ধান, গম, সরিষা, পাট, মরিচ, আলু, ডাল, ভুট্টা, সয়াবিন, আখ, কাঠবাদাম।

প্রধান ফলঃ আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, তাল, লেবু, নারিকেল, সুপারি, আপেল, সারিফা, আমড়া, জাম।

খামারঃ এ জেলায় ৫৮ টি মৎস্যখামার, ১৬টি নার্সারি, ১০২টি দুগ্ধ খামার, ২২২টি মুরগীর খামার ও ৩টি হ্যাচারি রয়েছে।

শিল্প-কারখানাঃ টেক্সটাইল মিল, ধানের কল, ময়দার কল, বরফের কল, অ্যালুমিনিয়াম কারখানা, বিড়ি কারখানা, মোম কারখানা, সাবানের কারখানা, নারিকেলের তন্তু প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, ছাপাখানা, তেলের মিল, ব্যাটারি কারখানা, বেকারি।

কুটির শিল্পঃবাঁশ ও বেতের কাজ, কাঠের কাজ, সেলাই, কামার, কুমার, মুচি, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির মেকানিক ইত্যাদি।

প্রধান রপ্তানি পন্যঃ নারিকেল, মাছ, মরিচ, কাঠবাদাম,সুপারি।

যোগাযোগ
এ জেলার ২৪৩ কিমি রাস্তা পাকা, ২৩৫ কিমি রাস্তা সেমি পাকা এবং ১৮২২ কিমি রাস্তা এখনও পাকা করা হয়নি।

চিত্তাকর্ষক স্থান
প্রায় শতাব্দী পুরাতন টুমচর
ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসা।

তিতা খান জামে মসজিদ
মিতা খান মসজিদ
মধু বানু মসজিদ
দায়েম শাহ মসজিদ
আব্দুল্লাহপুর জামে মসজিদ
শাহাপুর নীল কুঠি
বশিকপুর জামে মসজিদ
দালাল বাজার জমিদার বাড়ী
শ্রীগোবিন্দ মহাপ্রভু আখড়া
দালাল বাজার মঠ
খোয়া-সাগর-দীঘি
কমলা সুন্দরী দীঘি
রামগঞ্জের শ্রীরামপুর রাজবাড়ী
পালের হাট স্কুল
জালালউদ্দিন মৌলভী বাড়ির শতাব্দী প্রাচীন মসজিদ
জাহানাবাদ বাইতুল আমান জামে মসজিদ
বশিকপুর বাজার
মজু চৌধুরির হাট
শিশু পার্ক
নন্দনপুর সমর উদ্দীন মৌলভী বাড়ী
নন্দনপুর ঈদগাহ ময়দান
হামিদুল্লাহ ভুইয়া বাড়ী, রসুলগঞ্জ বাজার।
মুফতি আহম্মদ উল্লাহ জামে মসজিদ, পশ্চিম চরপাতা
কৃতি ব্যক্তিত্ব
হাফেজ্জী হুজুর
আ স ম আব্দুর রব
মোহাম্মদ উল্যাহ বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি
অধ্যাপক মুজাফফর আহমদ চৌধুরী ( শিক্ষাবিদ ও প্রাক্তন মন্ত্রী পরিষদ সদস্য)
কাজী মোতাহার হোসেন (সাহিত্যিক)
সেলিনা হোসেন (কথা সাহিত্যিক)
ডঃ মফিজুল্যাহ কবির (ইতিহাসবিদ)
দিলারা জামান
রামেন্দ্র মজুমদার
ফেরদৌসী মজুমদার
এ.টি এম. শামসুজ্জামান (অভিনেতা)
নিশাত মজুমদার (প্রথম বাংলাদেশী নারী এভারেষ্ট বিজয়ী)
মরহুম মুফতি আহম্মদ উল্লাহ

বুধবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৫

ন্যানোটেকনোলজির ইতি কথা..ন্যানোটেকনোলজি কি ?

ন্যানো একটি মাপার একক। ম্যাট্রিক
একক এর শুরুটা হয়েছিল ১৭৯০ সনে
ফ্রান্সে। ফ্রান্স জাতীয় পরিষদ
এককগুলিকে সাধারণ করবার জন্য
কমিটি গঠন করে এবং তারাই প্রথম
ডেসিমাল কিংবা দশ একক এর
ম্যাট্রিক পদ্ধতির প্রস্তাব করেন। এবং
দৈর্ঘ্যের একক এক মিটার এর সূচনা
করেন। তারা পৃথিবীর পরিধির
৪০,০০০,০০০ ভাগের এক ভাগকে এক
মিটার বলেন। মিটার শব্দটি গ্রিক শব্দ
metron থেকে এসেছে যার অর্থ হল,
পরিমাপ। এছাড়া মিটার এর ১০০
ভাগের এক ভাগকে সেন্টিমিটার
বলা হয়। ১৭৯৩ সনে ফ্রান্সে আইন করে
তা প্রচলন করা হয়। ১৯৬০ সনে এই মিটার
এর সংজ্ঞা পরিবর্তন করা হয়। ক্রিপটন
৮৬ এর কমলারঙের রেডিয়েশন এর
তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ১,৬৫০,৭৬৩.৭৩ ভাগের এক
ভাগকে মিটার বলা হয়। ১৯৮৩ সনে
মিটার এর সংজ্ঞা পুনরায় পরিবর্তিত
করা হয়, বর্তমান সংজ্ঞা অণুযায়ী,
বায়ুশুন্যে আলোর গতির ২৯৯,৭৯২,৪৫৮
ভাগের এক ভাগকে মিটার বলা হয়। এই
মিটার এর ১,০০০,০০০,০০০ (১০০ কোটি)
ভাগের এক ভাগকে ন্যানোমিটার
বলা হয়। ন্যানো শব্দটি গ্রিক nanos শব্দ
থেকে এসেছে যার অভিধানিক অর্থ
হল dwarft কিন্তু এটি মাপের একক
হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর এই
ন্যানোমিটার স্কেলে যে সমস্ত
টেকনোলজি গুলি সর্ম্পকিত
সেগুলিকেই বলে ন্যানোপ্রযুক্তি।
মিটার এককটি আমাদের দৈনন্দিন
জীবনের সাথে জড়িত। বাড়িঘর
আসবাবপত্র সবই আমরা মাপি এই মিটার
এককে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত
মিলিমটার স্কেলে যন্ত্রপাতির
সূক্ষতা মাপা হত। মিলিমিটার এর
ছোট কোন কিছু নিয়ে চিন্তা
ভাবনার অবকাশ ছিলনা। কিন্তু
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পরে,
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এক নতুন যুগের
সূচনা হল। সেমিকণ্ডাকটর তার
পথযাত্রা শুরু করল। আর এর শুরুটা হল,
ট্রানজিস্টর আবিষ্কার দিয়ে। তখন
মাইক্রোমিটার একক দিয়ে আমাদের
চিন্তভাবনা শুরু হল। বলা যায় যাত্রা
শুরু হল, মাইক্রোটেকনোলজির।
এর পরে টেকনোলজি এগুতে লাগলো
প্রচন্ড গতিতে। নানা জিনিসপত্র, যার
মধ্যে টেলিভিশন, রেডিও, ফ্রিজ
ইত্যাদি ইত্যাদি। আর তা কিভাবে
আরো ছোট করা যায় তা নিয়েই
প্রচন্ত যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। কোন কম্পানি
কত ছোট আকারের এই সমস্ত ভোগ্য
জিনিস আমাদের কাছে পৌঁছাতে
পারবে, তার প্রতিযোগীতা শুরু হল।
আর এই সমস্ত ব্যাপারটা সম্ভব হল,
সেমিকণ্ডাকটর সংক্রান্ত প্রযুক্তির
কল্যাণে। প্রথম দিকের রেডিও
কিংবা টিভির আকার দেখলে
আমাদের এখন হাসি পাবে। এত বড় বড়
জিনিস মানুষ ব্যাবহার করত
কিভাবে? সেই প্রশ্নটি হয়তো এসে
দাড়াবে। কিন্তু এখন বাজারে
দেয়ালে ঝুলাবার জন্য
ক্যালেন্ডারের মত পাতলা টিভি
এসেছে। সামনে হয়তো আরো ছোট
আসবে।
১৯৮০ সনে IBM এর গবেষকরা প্রথম
আবিষ্কার করেন STM(Scanning Tunneling
Microscope) এই যন্ত্রটি দিয়ে অণুর গঠন
পর্য়ন্ত দেখা সম্ভব। এই যন্ত্রটির
আবিষ্কারই ন্যানোপ্রযুক্তিকে
বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে।
কিভাবে কাজ করে এই STM। এই যন্ত্রে
খুব সূক্ষ পিনের মত সুচাল টিপ আছে
এবং তা যখন কোন পরিবাহী বস্তুর খুব
কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তা
থেকে টানেলিং নামে খুব অল্প
পরিমাণে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হয়। এবং
এই বিদ্যুৎ এর পরিমাণ দিয়েই সেই
বস্তুটির বাহিরের স্তরের অণুর চিত্র
তৈরি করা হয়। তবে এই STM এর
ক্ষেত্রে যা দেখতে চাইবো তাকে
অবশ্যই বিদ্যুৎ পরিবাহী হতে হবে।
কিন্তু বিদ্যুৎ অপরিবাহীর অণুর গঠন
কিভাবে দেখা যাবে? না মানুষ
বসে থাকেনি। অসম্ভবকে সম্ভব করেই
মানুষ যেভাবে এতদূর এসেছে, তেমনি
ভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করা গেল
AFM দিয়ে। STM এর ক্ষেত্রে
টানেলিং বিদ্যুৎ দিয়ে কাজ করা হয়
এবং AFM দিয়ে সুক্ষ্ম পিন দিয়ে অণুর
গঠন দেখা সম্ভব।
ন্যানোটেকনোলজির ক্ষেত্র দুটি
প্রক্রিয়া আছ। একটি হল উপর থেকে
নীচে (Top to Bottom)ও অপরটি হল নীচ
থেকে উপর (Bottom to top)। টপডাউন
পদ্ধতিতে কোন জিনিসকে কেটে
ছোট করে তাকে নির্দিষ্ট আকার
দেয়া হয়। এই ক্ষেত্র সাধারণত Etching
প্রক্রিয়াটি সর্ম্পকিত। আর ডাউনটুটপ
হল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আকারের ছোট জিনিস
দিয়ে বড় কোন জিনিস তৈরি করা।
আমাদেরর বর্তমান ইলেক্ট্রনিক্স হল,
টপডাউন প্রযুক্তি। আর
ন্যানোটেকনোলজির হল, বটমটপ
প্রযুক্তি। ন্যানোমিটার স্কেলে ক্ষুদ্র
ক্ষুদ্র বস্তুর উপাদান দিয়ে তৈরি করা
হবে এই ন্যানোপ্রযুক্তিতে। সহজে
বুঝবার জন্য একটা উদাহরণ দেয়া যাক।
মনে করুন, আপনার একটা বিশেষ ধরনের
DNA এর প্রয়োজন। সুতরাং বটমটপ
প্রযুক্তিতে, সেই DNA এর ছোট ছোট
উপাদান গুলিকে মিশ্রন করে সেই
কাঙ্খিত DNA টি তৈরি করা হবে।
তবে নানোপ্রযুক্তিতে শুধু মাত্র
বটমটুটপ প্রযুক্তিই নয়, বরং টপটুবটম
প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই দুটির
সংমিশ্রন করা হবে।
আমরা যারা কম্পিউটার ব্যবহার করছি
তারা জানি যে, প্রতি বছরই
কম্পিউটার এর মূল্য কমছে। প্রতিবছরই
আগের তুলনায় সস্তায় আরো ভাল
কার্যক্ষমতার কম্পিউটার পাওয়া
যাচ্ছে। আসলে এই কম্পিউটার এর
সাথেও ন্যানোটেকনোলজি
সম্পর্কিত রয়েছে। কম্পিউটার এর ভিতর
যে প্রসেসর আছে, আপনারা প্রায়
সবাই ইন্টেল প্রসেসর এর নাম শুনে
থাকবেন? এই প্রসেসর এর ভিতরে
রয়েছে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র
ন্যানোমিটার স্কেলের সার্কিট। আর
তাতে ব্যবহৃত হচ্ছে ন্যানোটেকনলজি।
ইন্টের প্রসেসরে, সিলিকন এর উপর
প্যাটার্ণ করে সার্কিট বানান হয়
তার বর্তমান সাইজ হল ১০০
ন্যানোমিটার। সামনের তিন বছরে এর
আকার হবে ৭০ ন্যানোমিটার। এবং
সাতবছরে এর আকার হবে ৫০
ন্যানোমিটার। ইন্টেল আশা করছে যে
২০১০ সনে তারা ৩০ ন্যানোমিটার
সাইজে নিয়ে আনতে পারবে। আর
আজকের থেকে তখন এই প্রসেসর এর
আকার অর্ধেক হয়ে আসবে। সেই
দিনটা খুব বেশী দূরে নয় যেদিন
আপনার মোবাইলটি কাজ করবে
কম্পিউটারের মত। (বর্তমানেই এই
ধরনের কিছু মোবাইল বাজারে
এসেছে)। এছাড়া রয়েছে
কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক। এই
হার্ডডিস্কের তথ্য সংরক্ষণের ক্ষমতা
দিন দিন বড়ছে। এই হার্ডডিস্কেও
ব্যবহৃত হচ্ছে ন্যানোটেকনলজি। এখন
বাজারে ৩০০ গিগাবইটেরর
হার্ডডিস্ক পাওয়া যাচ্ছে। আথচ এই
ব্যাপারটা আজ হতে ১০ বছর আগেও
ছিল কল্পনার বাহিরে।
ন্যানোটেকনলজি দিয়ে সার্কিট
বানান যতটা সোজা বলে মনে করা
হয়, ব্যাপারটা ততটা সোজা নয়।
সেইখানে প্রধান যে বাধা এসে
দাড়াবে তা হল, স্থির বিদ্যুৎ। শীতের
দিনে বাহির থেক এসে দরজার নবে
হাত দিয়েছেন? এমনি সময় হাতে শক
লাগল কিংবা অন্ধকারে সুয়েটার
খুলতে গেছেন এমনি সময় বিদ্যুৎ এর মত
কনা সুয়েটারে দেখা গেল। এইগুলি
সবই আমাদের প্রাত্যাহিক দিনে ঘটে,
আর এইগুলিই হল স্থির বিদ্যুতের
কারসাজি। সাধারণ ইলেক্ট্রিক
সার্কিটের মধ্যে এই স্থির বিদ্যুৎ
থেকে সার্কিটটিকে রক্ষা করার
ব্যবস্থা থাকে। যদি তা না করা হত,
তাহলে কোন একটা কারণে স্থির
বিদ্যুৎ আপনার বৈদ্যুতিক
সারঞ্জামকে নষ্ট করে দিত। কিন্তু
ন্যানোটেকনলজির ক্ষেতে বৈদ্যুতিক
সার্কিট কল্পনাতিত ছোট হয়ে যায়
বলে গতানুগতিক পদ্ধতিতে রক্ষা করা
সম্ভব নয়। কিভাবে ন্যানোস্কেলেও
এই সার্কিটগুলিকে রক্ষা করা যায়
তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষনা
করছেন। স্থির বিদ্যুৎ সার্কিটে কীরকম
ক্ষতি করতে পারে? প্রকৃতপক্ষে
ছোটসার্কিটে স্থিরবিদ্যুত প্রায়
১৫০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড এর মত তাপ
সৃষ্টি করে। এই তাপে সার্কিট এর
উপকরণ গলে, সেই সার্কিটটিকে নষ্ট
করে দিতে পারে। এই কারণে ১৯৯৭ এর
পরে IC সার্কিটে গতানুগতিক ভাবে
ব্যবহৃত এলুমিনিয়ামের পরিবর্তে
তামা ব্যবহৃত হয়। কেননা তামার
গলনাঙ্ক ১০৮৩ যেখানে
এলুমিনিয়ামের গলনাঙ্ক ৬৬০ ডিগ্রী
সেন্টিগ্রেড। ফলে অধিক
তাপমাত্রাতেও তামা
এ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় ভাল কাজ
করবে।
১৯৮৯ সনের নভেম্বরের ৯ তারিখ খুব
সম্ভবত ন্যানোটেকনলজির জন্য একটা
অন্যতম স্মরণীয় দিন হিসবে বিবেচিত
হবে। এই দিনে ক্যালিফোর্নিয়ার
IBM এর Almaden Research Center এ Don Eigler
এবং Erhard Schweizer ৩৫ টি Xenon অণু
দিয়ে IBM এর লগোটি তৈরি
করেছিলেন। সেইদিনই প্রথম অণুকে
ইচ্ছেমত সাজিয়ে পছন্দমত কিছু তৈরি
করা সম্ভব হয় মানুষের পক্ষে। তাই
দিনটি হয়তো আজ হতে অনেক বছর পরে
ন্যানোটেকনলজির ক্ষেত্রে প্রথম
মাইল ফলক হিসাবে পরিগণিত হবে।
এইদিনই প্রথম মানুষ প্রকৃতির সবথেকে
গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি অণুর কাঠামোকে
ভাঙতে সক্ষম হয়েছিল। অণুর গঠনকে
ইচ্ছেমত তৈরি করে অনেক কিছু করা
সম্ভব। এক বিশাল সম্ভাবনার দ্বার
মানুষের সামনে উন্মোচিত হল।
ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে বলা যাক। শুধু
মাত্র অণুর কাঠামোগত পার্থক্য হবার
কারণেই কয়লা এত সস্তা আর হীরক এত
দামী। দুটি জিনিসের মূল উপাদান হল
কার্বণ। শুধু মাত্র অণুর গঠনের পার্থক্যের
কারণে হীরক পৃথিবীর সবথেকে শক্ত
দ্রব্য আর কয়লা কিংবা পেন্সিলের
শীষ নরম।
কিন্তু ন্যানোপ্রযুক্তির কল্যাণে যদি
আমরা ইচ্ছেমত এই অণুকে সাজাতে
পারি, তাহলে চিন্তা করে দেখুন
ব্যাপারটা। আমরা ইচ্ছেমত যা ইচ্ছে
তাই তৈরি করতে পারব। এছাড়া ১৯৯৯
সনে Cornell বিশ্ববিদ্যালয়ের Wilson Ho
এবং তার ছাত্র Hyojune Lee অণুকে
জোড়া লাগানোর প্রক্রিয়া প্রদর্শন
করেন। এতদিন পর্যন্ত অণু-পরমানুর
সংযোগ শুধু মাত্র রাসয়নিক
বিক্রিয়ার মাধ্যমেই সংগঠিত হত।
কিন্তু ন্যানোটেকনলজির মাধ্যমে অণু-
পরমানুক ভেঙে কিংবা জোড়া
লাগিয়ে অনেক কিছুই করা সম্ভবনার
দ্বার খুলে দিল।
ন্যানোটেকনলজির ভিত্তিতে অনেক
অনেক নতুন নতুন টেকনলজির উদ্ভব হচ্ছে।
নতুন নতুন দ্রব্য এর সূচনা করছে এবং সেই
সাথে ব্যবসায়িক সুযোগের দ্বার
উন্মোচন করছে। আশা করা হচ্ছে যে
আমেরিকাতে ২০১০ সনের আগে
ন্যানোটেকনলজি সম্পর্কিত পণ্যের
বাজার ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌছবে
এবং ৮ লক্ষ নতুন চাকরির সুযোগ করে
দেবে। ন্যানোটেকনলজির গুরুত্বের
কথা চিন্তা করে আমেরিকার সরকার
বর্তমানে ন্যানোটেকনলজি
সংক্রান্ত গবেষণাতে ২০০০
খ্রিস্টাব্দে ৪২২ মিলিয়ন ডলার এবং
২০০৩ খ্রিস্টাব্দে ৭১০ মিলিয়ন ডলার
ব্যবহৃত হয়েছিল। শুধু সরকারই নয়,
পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি
প্রতিষ্ঠানও ন্যানোটেকনলজি
গবেষণায় অর্থ সরবরাহ করছে। তার
কারণ হল: ন্যানোটেকনলজি
সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার উন্মোচন করতে
যাচ্ছে। যদিও ন্যানোটেকনলজি খুব
ক্ষুদ্র টেকনলজি সংক্রান্ত
জিনিসগুলি নিয়ে কাজ করে যার
ব্যাস একটি চুলের ব্যাসের ৮০ হাজার
ভাগের এক ভাগ, কিন্তু এর ক্ষেত্র দিন
দিন আরো বর্ধিত হচ্ছে। ১৯৯৬ সনের
নোবেল পুরষ্কারে সম্মানিত রিচার্ড
স্মলি বলেছেন,

মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৫

ব্রণের কারন ও প্রতিকার

ব্রণ একটি বিশ্রী সমস্যা কম বেশি অনেকেই এর
শিকার হন।

সাধারণত টিন এজার অর্থাৎ ১৩ -১৯
বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে ব্রণ একটি
সাধারন অসুখ। তবে যে কোন বয়সেই ব্রণ হতে
পারে। ব্রনে আক্রান্ত যুবক যুবতীদের মানসিক
অশান্তির শেষ থাকেনা। ব্রণ দেখতে বিভিন্ন রকম
হতে পারে । যেমন ছোট ছোট গোল ফুসকুড়ি ,লালচে
ছোট ছোট গোটা, আবার পুঁজ পুর্ন বড় বড় চাকাও
হতে পারে। ব্রণ টি পরে ভাতের দানার মত বেরিয়ে
আসে। অনেকের মুখে ব্রণ খুব যন্ত্রণাদায়ক হয়।
ব্রণের ফলে ত্বকে ছিদ্র দেখা দিতে পারে। কারো
কারো মুখে ব্রণের তীব্রতা বেশি থাকলে তা এবড়ো
থেবড়ো দেখায়। ব্রণ বেশি টেপা টেপি করলে
সেখানে কালো দাগ সৃষ্টি হয়।
ব্রণ যেখানে হয়- ব্রণ সাধারন মুখেই বেশি হয়।
বিশেষ করে গাল, নাক, কপাল ও থুতনিতে। তবে ঘাড়,
কাঁধ, বুক, পিঠ, স্তন, নাভি ও উরুতেও ব্রণ হয়ে
থাকে।
ব্রণ হওয়ার কারন - আমাদে ত্বকে অনেক গুলো
"সিবাসিয়াস গ্রন্থি" থাকে যা থেকে সব সময় সিবাম
নামক এক ধরনের তৈলাক্ত রস নিঃসৃত হয় ।
লোমকুপ দিয়ে এই সিবাম বের হয়ে ত্বকে ছড়িয়ে
পড়ে বিধায় ত্বকে নরম, মসৃন ও তৈলাক্ত ভাব
আসে। যদি কোন কারনে সিবাম এর নিঃসরণ বৃদ্ধি
পায় এবং লোমের গোড়ায় বিদ্ধমান কেরাটিন( এক
ধরনের প্রোটিন জাতীয় পদার্থ) ধুলাবালির সঙ্গে
মিশে  সেখানকার ছিদ্র পথ বা নির্গমন পথ বন্ধ করে
দেয় ফলে সিবাম বের হতে না পেরে জমা হয়ে ব্রণ
হিসাবে প্রকাশ পায়। ব্রণ 'প্রোপাইনি ব্যক্টেরিয়াম
একনিস' নামক এক ধরনের জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত
হয়ে পরে তা আরো তীব্রতা লাভ করে। উল্লেখ্য
সিবাসিয়াস গ্রন্থি শরীরের মধ্যে মুখের ত্বকে বেশি
থাকে। তাই ব্রণ ও মুখে বেশি হয়।
এন্ড্রোজেন নামক এক প্রকার হরমোনের প্রভাবে
সিবামের উৎপাদন ও নিঃসরণ বেড়ে যেতে পারে।
ফলে এখান থেকেও ব্রণ সৃষ্টি হয়।
এছাড়া বিভিন্ন শারীরিক,মানসিক ও পারিপার্শ্বিক
পরিবর্তনের সঙ্গে ব্রণের তীব্রতা উঠা নামা করতে
পারে। মানসিক অশান্তি, অতিরিক্ত চিন্তা এবং
মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রতিবার মাসিকের আগে ব্রণের
তীব্রতা বেড়ে যায়। যারা অতিরিক্ত প্রসাধনী
ব্যবহার করেন তাদের ও ব্রণ হতে পারে। এছাড়া
জন্ম নিয়ন্ত্রন বড়ি খেলেও ব্রণ হয়।
ব্রণের চিকিৎসা - সব ধরনের প্রসাধন বর্জন করতে
হবে, নখ দিয়ে ব্রণ খুটা খুটি করা যাবেনা। ভালো
কোন সাবান বা ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে ।
মুখে কাঁচা হলুদ পেস্ট করে লাগালে ভালো ফল
পাওয়া যায়। মুখ ধোয়ার পর মধু মাখালে ব্রণ সেরে
যায় কারন মধু এন্টি ব্যক্টেরিয়াল হিসাবে কাজ
করে। সমস্যা বেশি হলে অবশ্যই একজন ভালো ত্বক
বিশেষজ্ঞ কে দেখাতে হবে।

হিসাব বিজ্ঞানঃ পর্ব(৩) আয় ও ব্যয়ের ধরন

গত পর্বে
আমরা সম্পদ ও দায়ের ধরন নিয়ে
আলোচনা করেছি। আজ আলোচনা করব

আয় এবং ব্যয়ের ধরন নিয়ে। এই আয় ও
ব্যয়ের ধরন আর্থিক অবস্থার
বিবরণীতে বিশেষ ভাবে কাজে
লাগবে।

আয়(R) - ব্যবসায়ের বিভিন্ন ধরনের আয়
হতে পারে ,  আয় কে প্রধানত ২
ভাগে ভাগ করা যায় ১)পরিচালন আয়।
২) অপরিচালন আয়।
১)পরিচালন আয়- যে সকল আয় করার
উদ্দেশ্যে ব্যবসায় পরিচালনা করা হয়
সে সকল আয় কে পরিচালন আয় বলে ।
পরিচালন আয় কে প্রধানত দুই ভাগে
ভাগ করা যায় -  ক)প্রত্যক্ষ পরিচালন
আয় খ) পরোক্ষ পরিচালন আয়
ক)প্রত্যক্ষ পরিচালন আয়- এই ধরনের
আয় হল    পন্য বিক্রয় ও সেবা আয়,
খ) পরোক্ষ পরিচালন আয় - এই ধরনের
আয় হল কমিশন প্রাপ্তি, বাট্রা
প্রাপ্তি(নগদ), চালানি কারবারের
লাভ, পুরাতন কুঋন সঞ্চিতি।
২) অপরিচালন আয়- এই ধরনের আয়
ব্যবসায় পরিচালনের বাইরে হয় ,এই
ধরনের আয়ের মধ্যে রয়েছে- স্থায়ী
সম্পদ বিক্রয় হতে মুনাফা, ডেবিট
উদ্ধৃত্তের সুদ/সম্পদের সুদ,বিনিয়োগের
সুদ, লগ্নির সুদ, সঞ্চয়পত্রের সুদ,
আমানতের সুদ, ব্যাংজমার সুদ, প্রদত্ত
ঋনের সুদ, ক্রয় কৃত ঋনপত্রের সুদ, সরকারী
বন্ডের সুদ, সুদ আয়, উত্তোলনের সুদ,
শিক্ষানবিশ সেলামী, প্রাপ্ত
ভাড়া,উপ ভাড়া, উপভাড়া প্রাপ্তি।
ব্যয় (E) - ব্যবাসায় পরিচালনা
কিংবা কাচামাল ক্রয় ইত্যাদি
সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যয় হতে পারে।
ব্যয় কে প্রধানত  দুই ভাগে ভাগ করা
যায় যথা- ১)পরিচালন ব্যয় ২)
অপরিচালন ব্যয়
১)পরিচালন ব্যয়- ব্যবসা পরিচালনা
করতে যে সকল ব্যয় হয় সে সকল ব্যয় কে
পরিচালন ব্যয় বলে পরিচালন ব্যয় কে
আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথা-
ক)প্রত্যক্ষ পরিচালন ব্যয় খ) পরোক্ষ
পরিচালন ব্যয়
ক)প্রত্যক্ষ পরিচালন ব্যয়-এই ধরনের ব্যয়
পন্য ক্রয় কিংবা উৎপাদনের সাথে
সরাসরি সমস্পৃক্ত থাকে এই ধরনের
ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে-
ক্রয়, মজুরি/ মজুরি ও বেতন, ক্রয় পরিবহন/
আন্তপরিবহন/অন্তর্মুখী পরিবহন/ পন্য
আনয়ন খরচ/পরিবহন/বহন খরচ, জাহাজ
ভাড়া/জলযান ভাড়া, ডক চার্জ, পন্য
খালাস খরচ,শুল্ক/আমদানি শুল্ক/
আবগারি শুল্ক/নগর শুল্ক,কারখানার
গুদাম ভাড়া, বিশেষ প্যাকিং খরচ,
কুলির খরচ, কারখানার ভাড়া,
কারখানার কর ও বিমা, গ্যাস,
জ্বালানি ও শক্তি, বিদ্যুৎ ও শক্তি,
আলো ও তাপ,কারখানার যাবতীয়
খরচ।
খ) পরোক্ষ পরিচালন ব্যয় -এই ধরনের
ব্যয় পন্য ক্রয় কিংবা উৎপাদনের
সাথে সরাসরি সমস্পৃক্ত থাকে না
তবে বিক্রয় ও বন্টনের সাথে থাকে।
এই ধরনের ব্যয়ের মধ্যে হল-বেতন,
বেতন ও মজুরি, বিজ্ঞাপন, প্যাকিং
খরচ, রপ্তানিশুল্ক, বিক্রয় প্রতিনিধির
কমিশন, ভ্রমন খরচ, প্রদত্তবাট্রা/
মঞ্জুরিকৃত বাট্রা/বাট্রা প্রদান/
বাট্রা(ডেবিট), বাজারজাত করন
খরচ/বিপনন খরচ, চালানি কারবারের
ক্ষতি, ভাড়া/প্রদত্ত ভাড়া,
টেলিফোন খরচ, ইন্টারনেট
খরচ,যাতায়াত খরচ, যোগাযোগ খরচ,
বিমা খরচ, অফিসের ভাড়া/
অফিসের যাবতীয় খরচ,  কর ও অভিকর,
সাধারন খরচ,মনিহারি/ছাপা ও
মনিহারি, পরিচালকের ফি, বোনাস,
মহার্ঘ ভাতা ইত্যাদি।
২) অপরিচালন ব্যয়- ব্যবসায়
পরিচালনার বাইরেও কিছু খরচ হয় এই
ধরনের খরচ কে অপরিচালন ব্যয় বলে ।
এই ধরনের ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে-
স্থায়ী সম্পদ বিক্রয় জনিত ক্ষতি,
কমিশন খরচ, প্রদত্ত কমিশন, কমিশন
প্রদান, ব্যাংক চার্জ, ঋনের সুদ/বন্ধকী
ঋনের সুদ, মূলধনের সুদ, শিক্ষানবিশ
ভাতা, বিবিধ ক্ষতি, দুর্ঘটনা জনিত
ক্ষতি, আগুনে বিনষ্ট পন্য ইত্যাদি
উপরোক্ত আয় ব্যয় গুলো যদি ভালো
ভাবে আয়ত্ব করা যায় তাহলে
আর্থিক বিবরনী অনেকটা সহজ হবে।
দেখা হবে আগামী পর্বে অন্য কোন
বিষয় নিয়ে সে পর্যন্ত সবাই ভালো
থাকুন।
ভালো লাগলে ঘুরে আসুন...

আমার ফালতু ব্লগ থেকে ।

হিসাব বিজ্ঞানঃ পর্ব(২) - সম্পদ এবং দায়ের ধরন

আজকে আমি আলোচনা করব সম্পদ এবং দায়ের
ধরন । গত পর্বে দেখিয়েছি সম্পদ এবং দায় কোন
গুলো।

সম্পদ (A)- কোন ব্যবসায় পরিচালনা করতে হলে
অবশ্যই সম্পদের প্রয়োজন রয়েছে সাধারণত
ব্যবসায়ে তিন ধরনের সম্পদ থাকে
১)স্থায়ী সম্পদ
২) বিনিয়োগ
৩) চলতি সম্পদ
১)স্থায়ী সম্পদ- যে সকল সম্পদ মুনাফা অর্জনের
জন্য বারবার ব্যবহার করা হয় অই সকল সম্পদ হল
স্থায়ী সম্পদ। এই ধরনের সম্পদ হতে এক বছরের
বেশি সময় ধরে সুবিধা পাওয়া যায়। সাধারণত মূলধন
বা দীর্ঘ মেয়াদী উৎস থেকে প্রাপ্ত অর্থ দ্বারা
স্থায়ী সম্পদ অর্জন হয়। এই স্থায়ী সম্পদ কে
আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথা- ক) অবচয়
যোগ্য খ) অবলোপন যোগ্য
ক) অবচয় যোগ্য - এই ধরনের সম্পদ ক্রমাগত
ব্যবহারে ফলে এটি ক্ষয় প্রাপ্ত হয় বা মুল্য হ্রাস
পায়। এই মুল্য হ্রাস পাওয়া কে অবচয় বলে। এই
ধরনের সম্পদ হল- খুচরা যন্ত্রাংশ, মোটর গাড়ী,
আসবাবপত্র, কলকব্জা ও
যন্ত্রপাতি,দালানকোঠা,অফিসসরঞ্জাম, বৈদ্যুতিক
সরঞ্জাম ইত্যাদি।
খ) অবলোপন যোগ্য - এই ধরনের সম্পদ ও
ব্যাবহারের ফলে মুল্য হ্রাস পায় তবে এই ধরনের
সম্পদের মধ্যে ইজারা সম্পত্তি ব্যাতিত বাকী গুলো
দেখা বা ধরা ছোঁয়া যায় না । এই ধরনের সম্পদ হল-
ইজারা সম্পত্তি ,প্রাথমিক খরচাবলী,
সুনাম,বিলম্বিত বিজ্ঞাপন, শেয়ার অবলেখকের
ব্যয়/ শেয়ার দালালি খরচ, ডিবেঞ্চার অবলেখন
ব্যয়, ঋনপত্র অবহার,ট্রেডমার্ক ইত্যাদি।
২) বিনিয়োগ - ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান অন্য কোন
প্রতিষ্ঠানে ঋন দিলে বা টাকা লাগালে তা
ব্যবসায়ের জন্য বিনিয়োগ এই ধরনের সম্পদ হল-
বিনিয়োগ, % বিনিয়োগ,প্রদত্ত ঋন, প্রদত্ত কর্জ,
লগ্নি( ডেবিট পাশের)% লগ্নি ইত্যাদি,
৩) চলতি সম্পদ-এই ধরনের সম্পদের নিয়মিত হ্রাস
বৃদ্ধি ঘটে এবং এই ধরনের সম্পদ হতে এক বছরের
কম সুবিধা পাওয়া যায়। এই ধরনের সম্পদ হলে- নগদ,
নগদ তহবিল/ নগদ উদ্ধৃত্ত, ব্যাংক জমা, প্রাপ্য
বিল, বিবিধ দেনাদার/প্রাপ্য হিসাব , মজুদপন্য/
সমাপনী মজুদ,যাবতীয় অগ্রিম ব্যয় যেমন- অগ্রিম
বাড়ি ভাড়া, অগ্রিম বিমা সেলামী, অগ্রিম কর
ইত্যাদি যাবতীয়। বকেয়া আয় যেমন- বকেয়া/
অনাদায়ী বিনিয়োগের সুদ, বকেয়া প্রাপ্ত ভাড়া,
বকেয়া সঞ্চয় পত্রের সুদ,
দায়(L) - প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তির বিপরীতে অথবা
অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের নিকট দেনা থাকলে সেটা
দায়। দায় সাধারণত দুই ধরনের
১)দীর্ঘ মেয়াদী দায়
২) চলতি দায়
১)দীর্ঘ মেয়াদী দায় - যে সকল দায় দীর্ঘ মেয়াদের
জন্য গ্রহন করা হয় তাকে দীর্ঘ মেয়াদী দায় বলে ।
এই ধরনের দায় সাধারণত ১ বছরের মধ্যে পরিশোধ
করা হয়না। এই ধরনের দায়ের মধ্যে রয়েছে-বন্ধকী
ঋন/ ঋন/ ব্যাংক ঋন/ %ঋন/ %ব্যাংক ঋন,
প্রদেয় বন্ড ইত্যাদি।
২) চলতি দায়- এই ধরনের দায় সাধারণত স্বল্প
সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা হয়। চলতি দায় দ্রুত
পরিবর্তনশীল।এই ধরনের দায় কে ক্ষনস্থায়ী দায়
বলা হয়। এই ধরনের দায়ের মধ্যে রয়েছে- ব্যাংক
জমাতিরিক্ত, বিবিধ পাওনাদার, প্রদেয় বিল,ব্যাংক
ওডি( ওভার ড্রাফ্ট),যাবতীয় বকেয়া খরচ/ ব্যয় সমূহ
যেমন- বকেয়া বেতন, বকেয়া মজুরি, বকেয়া ভাড়া,
বকেয়া ঋনের সুদ, বকেয়া ব্যাংক জমাতিরিক্তের সুদ,
যাবতীয় ইত্যাদি, অগ্রিম আয় সমূহ যেমন- অগ্রিম
শিক্ষানবিশ সেলামী, অগ্রিম বাড়ি ভাড়া প্রাপ্ত
ইত্যাদি